আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পাঁচ বছর : বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

আমাদের আজকের আলোচনা বিষয় – আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পাঁচ বছর : বদলে যাওয়া দৃশ্যপট। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও নির্বাচিত দলিল এর একটি অংশ।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পাঁচ বছর : বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

 

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পাঁচ বছর : বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

 

আমরা আমাদের অঙ্গীকার পূরণ করেছি। তবে আমাদের অঙ্গীকার ও কর্মসূচি কেবল পাঁচ বছরের জন্য ছিল না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো রাজনৈতিক দল একটা দীর্ঘমেয়াদি সুস্পষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল।

২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত রূপকল্প-২০২১ বা ভিশন আমরা উপস্থাপন করেছিলাম। সদ্য সমাপ্ত পাঁচ বছর মেয়াদে আমরা এই কর্মসূচি ও রূপকল্প-২০২১-এর যে অংশটি বাস্তবায়িত করেছি, এখানে তার সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরা হলো-

অতীতের অনিশ্চয়তা, সংকটের চক্রাবর্ত এবং অনুন্নয়নের ধারা থেকে বের করে এনে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাস্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের গতিপথে পুনঃস্থাপিত করা হয়। রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২১ এবং ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১০-১৫)। উভয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ।

গত নির্বাচনী ইশতেহারে যে পাঁচটি অগ্রাধিকারের বিষয় নির্ধারিত হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে কেবল কাঙ্ক্ষিত সাফল্যই অর্জিত হয় নি, কোনো কোনো খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কঠোর হস্তে ভোক্তা অধিকার রক্ষা এবং মূল্য সন্ত্রাস বন্ধ করা হয়।

চাল, ডাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর ঊর্ধ্বগতি রোধ, চালের দাম হ্রাস এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখা হয়। মূল্যস্ফীতির হার ১১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭.৫ শতাংশে স্থিতিশীল করা হয়। পক্ষান্তরে জনগণের আয়- রোজগার ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। টাস্ক ফোর্স গঠন, রপ্তানিকারকদের আর্থিক প্রণোদনাদানসহ দক্ষতার সঙ্গে বিশ্বমন্দার অভিঘাত ও প্রভার সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়।

বিশ্ব পরিসরে প্রবৃদ্ধি এবং বাণিজ্যের নিম্নগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা কেবল চালুই থাকে নি, এই প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশে গড়ে ৬.২ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিএনপি জোট সরকারের আমলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করলেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে, কারা দেশকে দ্রুত উন্নত-সমৃদ্ধ করতে সক্ষম। অর্জিত সাফল্যের নিম্নলিখিত তুলনামূলক চিত্রের দিকে তাকালেই এ সত্যই প্রতিভাত হবে যে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ অবশ্যই একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।

সামষ্টিক অর্থনীতির এই চিত্র আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসাসূচক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ কথা সবাই স্বীকার করবেন,অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় ও জাতীয় আয় বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের পাঁচ বছরে আমাদের জাতীয় বাজেটের আয়তন ২০০৬- এর তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩.৭ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩.৭ গুণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ গুণ, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। রপ্তানি আয় বেড়েছে আড়াই গুণ। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ৩ গুণের বেশি বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ ১০ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।

বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলের পাঁচ বছরই বাংলাদেশ শীর্ষ দুর্নীতিপরায়ণ দেশ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। গত পাঁচ বছরে সেই দুর্নাম বহুলাংশে মোচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন পুনর্গঠন করেছে। দুর্নীতির তদন্ত, অনুসন্ধান, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দুদক প্রয়োজনে মন্ত্রী, আমলাসহ যে-কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদের নজির স্থাপন করেছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের উৎসমুখগুলো বন্ধ করার লক্ষ্যে অনলাইনে টেন্ডারসহ বিভিন্ন সেবা খাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী প্রকোপ কমেছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অর্জিত হয়েছে অভূতপূর্ব সাফল্য। জরুরি আপদকালীন ব্যবস্থা ছাড়াও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান হয়েছে। ২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ইতোমধ্যে তা ১০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাণিজ্য নতুন সম্ভাব নার দ্বার উন্মোচন করেছে। ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে রাশিয়ার সাহায্যে ২০০০ মেগাওয়াটের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মংলা ও চট্টগ্রামে কয়লাভিত্তিক আরও দুটি বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। দেশের ৬২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। নতুন নতুন গ্যাসকূপ খনন, গ্যাসক্ষেত্র এবং দুটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে। শিল্প-কারখানা এবং গৃহস্থালী কাজে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

দারিদ্র্য বিমোচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। দারিদ্র্য বিমোচনসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা (গউএ) নির্ধারিত ২০১৫ সালের দুই বছর আগেই অর্থাৎ, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

ইতোমধ্যে ২০১৩ সালে সাধারণ দারিদ্র্যসীমা ২৬.২ শতাংশে এবং হত-দরিদ্রের হার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ১১.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রায় ৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে মধ্যবিত্তের স্তরে উঠে এসেছে। কমেছে আয়-বৈষম্য।

গত পাঁচ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংগঠিত খাতে ৬৯ লাখ মানুষের এবং বিদেশে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মাত্র ৩৩ হাজার ২৭৪ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে শ্রমিক নিয়োগ, সৌদি আরবে ‘ইকামা’ পরিবর্তনের সুবাদে ৪ লক্ষাধিক কর্মী বৈধ হয়েছে।

বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান ও ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অব্যাহত আছে। ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় প্রায় ৫৭ হাজার প্রশিক্ষণার্থী তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনী ইশতেহার-২০০৮-এ সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছিল অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, শুরুতেই এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারকে হোঁচট খেতে হয়; মোকাবিলা করতে হয় অকল্পনীয় চ্যালেঞ্জ। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করার মাত্র ৫২ দিনের মাথায় সংঘটিত হয়। রক্তাক্ত বিডিআর বিদ্রোহ।

চরম ধৈর্য, অসীম সাহস ও রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিডিআর বিদ্রোহের শাস্তিপূর্ণ সমাধান করেন। সেনাবাহিনীতে আস্থা ফিরিয়ে আনেন। ইতোমধ্যে বিডিআর বিদ্রোহের ১৮ হাজার আসামির বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধিতে ৮৫০ জন অভিযুক্তের বিচার করা হয়েছে।

এই বিচার সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীতে শৃঙ্খলা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। বিডিআর বিদ্রোহের কলঙ্ক মোচনের উদ্দেশ্যে এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) রাখা হয়েছে। নতুন আইনও প্রণয়ন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে, সম্পন্ন হয়েছে জেলহত্যার বিচার। উন্মুক্ত হয়েছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ।

নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১০ যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কার্যকর করা হয়েছে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়। সংসদকে কার্যকর ও অংশগ্রহণমূলক করতে সংসদের প্রথম অধিবেশনেই ৫০টি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। বিরোধী দল থেকেও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৫০ জনে উন্নীত করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান বলে *৭২-এর সংবিধান সংশোধন করে। পরবর্তীকালে সেনাশাসক এরশাদও একইভাবে সংবিধান সংশোধন করে। ২০০৬ সালে হাইকোর্ট এবং ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসন ও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে

। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই সামরিক শাসকদের অবৈধ সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করেছে। ‘৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ছিল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে ‘৭২-এর সংবিধানের মূল চেতনায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়।

২১ জুলাই ২০১০ জাতীয় সংসদের সকল দলের সদস্য সমন্বয়ে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংবিধান সংশোধনী সংসদীয় কমিটি গঠিত হয়। দীর্ঘ প্রায় এক বছর সংসদীয় কমিটি দেশের প্রতিষ্ঠিত প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংগঠন এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করে।

অসংখ্য সংগঠন/প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি লিখিতভাবেও তাদের মতামত জানায়। সংসদীয় কমিটির ২৭টি সভায় এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ৩০ জুন ২০১১ জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হয়। এ সংশোধনীর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংবলিত ‘৭২-এর সংবিধানের চার মূলনীতি সংবিধানে পুনঃসংযোজিত হয়। অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ হয়।

নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আর্থিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিচার বিভাগের জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম মহামান্য রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সার্চ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে লোকবল নিয়োগ ও আর্থিক ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সংসদ উপ-নির্বাচন, সিটি করপোরেশন ও মেয়র নির্বাচনসহ ৫ হাজার ৮০৩টি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচিত হয়েছে ৬৪ হাজার ২৩ জনপ্রতিনিধি। স্থানীয় সরকার এবং জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহে নিশ্চিত করা হয়েছে জনগণের ভোটাধিকার। প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।

ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও পৌর কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে।

গঠন করা হয়েছে কার্যকর স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন। সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম-অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বৈষম্যমূলক অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন করা হয়েছে।

প্রণয়ন করা হয়েছে তথ্য অধিকার আইন এবং গঠন করা হয়েছে তথ্য অধিকার কমিশন। বিএনপি-জামাত জোটের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রত্যক্ষ মদতে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্যাৎ ও জঙ্গিবাদের উত্থানের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ বছর জঙ্গিবাদীদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হয়েছে। সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের কলঙ্ক তিলক মোচন করে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ জনপদ।

প্রবাসী বাঙালিদের জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের নিমিত্তে ৩টি অনাবাসী ব্যাংক স্থাপিত হয়েছে। দলীয়করণের ঊর্ধ্বে দক্ষ ও গণমুখী জনপ্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বহুমুখী সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে । ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কম্পিউটার সরবরাহ এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি যোগ্যতা, জ্যেষ্ঠতা ও মেধার ভিত্তিতে সব নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত করা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর

গ্রহণের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়স বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬০ বছর। ঘোষণা করা হয়েছে ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা। সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত মহিলাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাসে উন্নীত করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার রাজস্ব খাতে ৪ লাখ ২৭ হাজারের বেশি পদ সৃষ্টি করেছে এবং ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি পদ স্থায়ী করেছে। চাকরিরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে ২০ হাজার টাকার স্থলে ৫ লাখ টাকা এবং আহত হলে ২ লাখ টাকা অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পাঁচ বছর : বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

 

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারী আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। বেতন, ভাতা, আবাসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ দেশের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসমূহকে আধুনিক ও দক্ষ করে গড়ে তোলার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রংপুরে নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিভাগীয় শহর রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও গাজীপুরকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করে সেসব করপোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। ময়মনসিংহকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়েছে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment