আজকে আমদের আলোচনার বিষয় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন
১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে গোলটেবিল বৈঠকের কার্যবিবরণী বিষয়ক একটি শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়। বৃটিশ পার্লামেন্ট এই শ্বেতপত্র অনুমোদন করে এবং ঐ বছরের এপ্রিল মাসে একটি সংসদীয় সিলেক্ট কমিটির ওপর ভারতের শাসনতান্ত্রিক অগ্রগতির জন্য সুপারিশমালা প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পণ করে। উক্ত কমিটি পরবর্তী বছরের শেষদিকে একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করে।
এই রিপোর্টের ভিত্তিতে বৃটিশ পার্লামেন্ট একটি আইন প্রণয়ন করে। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল রাজা এই আইনের প্রতি সম্মতি প্রদান করেন। এর নাম ‘ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫’। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল থেকে এই আইন কার্যকর হয়। বৃটিশ ভারতের শাসনতান্ত্রিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এর পশ্চাতে ছিল দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা ও চিন্তা-ভাবনা। যে চারজন এই আইনের প্রধান রচয়িতা ছিলেন তাঁরা হলেন ভারত সচিব স্যার স্যামুয়েল হোর, তাঁর সংসদীয় উপসচিব আর.এ. বাটলার, সংসদীয় সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান লর্ড লিনলিথগো (পরবর্তী ভারতীয় ভাইসরয়), এবং এই আইনের প্রধান মুসাবিদাকারী স্যার মরিস গইয়ার (পরে ভারতের প্রধান বিচারপতি)।
যদিও ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়নি তবুও এর তাৎপর্য অস্বীকার করা যায় না। এর মাধ্যমে বৃটিশ ভারতীয় প্রদেশসমূহ স্বায়ত্তশাসনের স্বাদ পায়। স্বাধীনতা-উত্তর ভারত ও পাকিস্তানের নিজস্ব সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন (কতিপয় সংশোধন সাপেক্ষে) দু’দেশের অস্থায়ী শাসনতন্ত্র হিসেবে কার্যকর ছিল। এই আইনের সারবস্তু ছিল-
(১) বৃটিশ ভারতের এগারটি প্রদেশের জন্য স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তন, এবং
(২) কেন্দ্রে একটি ভারতীয় ফেডারেশন গঠন যাতে দেশীয় রাজ্যসমূহ যোগদান করবে। কেন্দ্রে এবং প্রদেশসমূহে সংসদীয় সরকারের ব্যবস্থা করা হয়। তবে কেন্দ্রে ভাইসরয়কে এবং প্রদেশে গভর্নরকে কতিপয় বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয় যা সত্যিকার সংসদীয় ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন ছিল।
উক্ত মৌলিক শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সুষ্ঠুভাবে কার্যকর করার জন্য তিনটি প্রশাসনিক ও পদ্ধতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনের অংশ হিসেবে। সেগুলো ছিল-
(১) বার্মা ও এডেনকে ভারত থেকে আলাদা করা হয় । সিন্ধুকে বোম্বাই থেকে এবং উড়িষ্যাকে বিহার থেকে পৃথক করে উভয়কে গভর্নর- শাসিত প্রদেশের মর্যাদা দেওয়া হয়,
(২) প্রধান শক্তি (Paramount power) হিসেবে দেশীয় রাজ্যসমূহের ওপর তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা ভারত সরকারের পরিবর্তে একজন রাজ-প্রতিনিধির (Crown Representative)
ওপর ন্যস্ত করা হয়। তবে ভাইসরয় রাজ-প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। (পরবর্তী বছরগুলোতে ভাইসরয়ই সবসময় উক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন), (৩) নতুন আইন সভাগুলোতে সম্প্রদায় ভিত্তিক পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। আসন বন্টনের ভিত্তি ছিল ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে বৃটিশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ (Communal Award)।
এই রোয়েদাদ অনুযায়ী প্রায় সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচনের অধিকার এবং আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। অস্পৃশ্যদেরকে হিন্দু সম্প্রদায় বহির্ভূত একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়রূপে গণ্য করা হয়। প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের পথ সুগম করার জন্য প্রদেশসমূহে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত দ্বৈত শাসন (Dyarchy) বিলোপ করা হয়। মন্ত্রিগণ প্রদেশের এখতিয়ারভুক্ত সব বিষয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
গভর্নর কতিপয় ক্ষেত্রে নিরংকুশ ক্ষমতা ভোগ করবেন এবং ‘ব্যক্তিগত বিচার বিবেচনা’ কাজে লাগাবেন। এসব বিশেষ ক্ষমতা ও দায়িত্বের মধ্যে ছিল শান্তিরক্ষা, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা ইত্যাদি । তদুপরি, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ব্যর্থ বা অচল হলে গভর্নর সরাসরি নিজহাতে শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারবেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্প্রসারণের চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়।
ভোটদাতাদের সম্পত্তির যোগ্যতা (Property qualifications) কমানো হয় যাতে ভোটদাতার সংখ্যা আগের চেয়ে পাঁচগুণ বেড়ে যায়। সকল প্রাপ্তবয়স্ককে ভোটাধিকার দিলে ভোটদাতার সংখ্যা যা হতো ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনের মাধ্যমে তার প্রায় এক-চতুর্থাংশ হয়। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইন কেন্দ্রে ফেডারেল পদ্ধতির সরকার গঠনের মূলনীতি প্রণয়ন করে।
ফেডারেশনের শর্ত ছিল যে, তাতে কমপক্ষে এমন সংখ্যক দেশীয় রাজ্য যোগদান করবে যার মোট জনসংখ্যা সমস্ত দেশীয় রাজ্যের জনসংখ্যার কমপক্ষে অর্ধেক হবে। এই শর্ত পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ যথেষ্ট সংখ্যক দেশীয় রাজ্য ফেডারেশনে যোগদান করেনি বিধায় শেষ পর্যন্ত এই আইনের কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কিত বিধিসমূহ কার্যে পরিণত হয়নি।
যদিও প্রথম গোলটেবিল বৈঠক চলাকালীন সময়ে সর্বভারতীয় ফেডারেশন গঠন সম্ভবপর বলে মনে হয়েছিল। ঐ অধিবেশনে বিকানিরের মহারাজা কিছু শর্তসাপেক্ষে দেশীয় রাজ্যসমূহের পক্ষ থেকে ফেডারেশনে যোগদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রথম গোলটেবিল বৈঠকের প্রথম অধিবেশনে তিনি এই মর্মে আশ্বাস দেন যে, রাজন্যবর্গ একটা স্বায়ত্তশাসিত ফেডারেশনে যোগ দেবেন যদি তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
তার এই বক্তব্যের পক্ষে তিনি ভোপালের নবাবের সমর্থন লাভ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজন্যবর্গের উৎসাহ কমে যায়। একটি সর্বভারতীয় ফেডারেশনের সঙ্গে নিজেদের ভাগ্য জড়ানোর ব্যাপারে তাঁরা নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আক্রান্ত হন । এই আইন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ফেডারেশন সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজন্যবর্গকে সত্যিকার ভিটো (veto) প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফেডারেশনে যোগদান করা না করা শাসকদের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল ছিল। ফলে তাঁদের অনিচ্ছার কারণে ফেডারেশনের পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের ফেডারেল অংশের প্রধান ধারাসমূহ ছিল নিরূপ- কেন্দ্রীয় আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হবে –
(১) উচ্চকক্ষ কাউন্সিল অফ স্টেট, এবং
(২) নিম্নকক্ষ হাউস অফ এসেম্বলি।
উচ্চকক্ষে বৃটিশ ভারতের সদস্য সংখ্যা হবে ১৫৬ এবং যোগদানকারী (acceding) দেশীয় রাজ্যসমূহ থেকে অনুর্ধ্ব ১০৪জন। নিম্নকক্ষে বৃটিশ ভারত এবং দেশীয় রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা হবে যথাক্রমে ২৬০ এবং ১২৫। দুই কক্ষেই দেশীয় রাজ্যসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ শাসকগণ কর্তৃক মনোনীত হবেন ।
দেশীয় রাজ্যসমূহের জনসংখ্যা ছিল সারা ভারতের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশেরও কম। কাজেই রাজ্যগুলোকে প্রদত্ত প্রতিনিধি সংখ্যা জনসংখ্যানুপাতের চেয়ে বেশি ছিল। তদুপরি আইনানুসারে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যসমূহের ব্যাপারে কেবলমাত্র সেই সমস্ত ক্ষমতা ভোগ করবে যা প্রতিটি দেশীয় রাজ্যের শাসক যোগদানের দলিল (Instrument of Accession) মারফত ছেড়ে দিতে সম্মত হবেন ।
এই আইনের শর্তসমূহ শাসকবর্গের এত অনুকূলে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা শেষ পর্যন্ত ফেডারেশন গঠনে সম্মত হননি। এর মূল কারণ নিজেদের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত হওয়ার ব্যাপারে রাজন্যবর্গের স্বাভাবিক অনীহা ছিল। ফলে, ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনের ফেডারেশন গঠন সংক্রান্ত বিধিসমূহ অকার্যকর থেকে যায়।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে বৃটিশ ভারতের দ্বিধা-বিভক্তি ও স্বাধীনতা লাভ পর্যন্ত সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯১৯ খ্রি. প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৩৬ খ্রি. থেকে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু পর্যন্ত নতুন ভাইসরয় লর্ড লিনলিথগো ফেডারেশন গঠনে রাজন্যবর্গের সহযোগিতা লাভের ব্যর্থ প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত ধারাসমূহ কার্যকর হয়েছিল।
অবশ্য কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ উভয় দল এই আইনের বিরোধী ছিল। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে দলের লখনৌ অধিবেশনে সভাপতি জওহরলাল নেহরু এই আইন সম্পর্কে কঠোর মত প্রকাশ করে বলেন যে, এর প্রতি কংগ্রেসের নীতি হবে আপোষহীন বিরোধিতা এবং সেই সঙ্গে একে নস্যাৎ করার অবিরাম প্রচেষ্টা। এই আইনে কংগ্রেসের দাবি ‘পূর্ণ স্বরাজ’ স্বীকৃত হয়নি, এমনকি ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদাও দেওয়া হয়নি।
তদুপরি মুসলমানসহ প্রায় সব সংখ্যালঘুর জন্য পৃথক নির্বাচনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসবই ছিল এই আইনের প্রতি কংগ্রেসের বিরূপতার প্রধান কারণ। আইন অকার্যকর করার ঘোষিত উদ্দেশ্য নিয়ে কংগ্রেস ১৯৩৬-৩৭ খ্রি. উক্ত আইনের আওতায় অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। মুসলিম লীগও এই আইনের সমালোচনায় মুখর ছিল।
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে লীগের বোম্বাই অধিবেশনে একে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে প্রস্তাব নেওয়া হয়। লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষায় এই আইন ছিল এক ‘দানবিক ব্যবস্থা’ (monstrosity)। তথাপি লীগের উক্ত সভায় প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন বিষয়ক বিধিসমূহ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইনের ফেডারেল অংশ কার্যকরী হলে কেন্দ্রে হিন্দু আধিপত্য কায়েম হবে এটাই ছিল লীগ কর্তৃক বিরোধিতার মূল কারণ ।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আইনানুসারে ১৯৩৬-৩৭ খ্রিস্টাব্দের শীতকালে প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ছোটবড় প্রায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এই প্রাদেশিক নির্বাচনে কংগ্রেসের সাফল্য এবং মুসলিম লীগের ব্যর্থতা প্রকট হয়। কংগ্রেস বৃটিশ ভারতের এগারটি প্রদেশের মধ্যে আটটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং সরকার গঠন করতে সমর্থ হয়।
লীগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশসমূহে (বাংলা ও পাঞ্জাব) সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন লাভে ব্যর্থ হয়। অবশ্য অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে মুসলিম লীগ এই ব্যর্থতা পুষিয়ে নিতে সক্ষম হয়। কংগ্রেস শাসনাধীন প্রদেশসমূহে ধীরে ধীরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কংগ্রেস বিরোধী এবং লীগপন্থী মনোভাব জোরদার হয়।
মুসলিম লীগ এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সর্বভারতীয় পর্যায়ে মুসলমানদের প্রধান রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়। ফলে ভারতের রাজনীতিতে দ্রুত সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ঘটে।
সারসংক্ষেপ
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন পূর্ববর্তী কয়েক বছরের শাসনতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনা ও কার্যক্রমের ফল। এই আইন বৃটিশ ভারতের সাংবিধানিক বিবর্তনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তন এবং সর্বভারতীয় ফেডারেশন গঠনের বিধান। তবে দেশীয় রাজ্যের শাসকদের অনিচ্ছাহেতু ফেডারেশন সংক্রান্ত ধারাসমূহ কার্যকর হয়নি। আইনের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন বিষয়ক বিধি-বিধান কার্যকর হয়েছিল।
এই আইনের বিরূপ সমালোচনা সত্ত্বেও কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ১৯৩৬-৩৭ খ্রিস্টাব্দের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে কংগ্রেসের সাফল্য ও মুসলিম লীগের ব্যর্থতা প্রকট হয়। এগারটি প্রদেশের মধ্যে আটটিতে কংগ্রেস দলীয় সরকার গঠিত হয়।
মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কংগ্রেস-বিরোধী মনোভাব বিস্তার লাভ করে। এই সুযোগে মুসলিম লীগ ভারতীয় মুসলমানদের প্রধান রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়। ফলে রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ত্বরান্বিত হয়।
সহায়ক গ্ৰন্থপঞ্জী :
১. S.M. Burke and Salim Al-Din Quraishi, The British Raj in India: An Historical Review, Dhaka, 1995.
২. H.V. Hodson, The Great Divide: Britain-India-Pakistan, Karachi, 1969.
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের পটভূমি সংক্ষেপে আলোচনা করুন।
২। এই আইনের প্রতি কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মনোভাব কি ছিল?
রচনামূলক প্রশ্ন :
১। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ পর্যালোচনা করুন ।
২। এই আইনের সাফল্য ও ব্যর্থতার মূল্যায়ন করুন।
আরও দেখুন: