আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ রাজনীতিতে যোগদান। যা ” দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান- এ এ কে নিয়াজি” বইয়ের অংশ।
রাজনীতিতে যোগদান
রাজনীতিতে যোগদান
রাজনীতিতে যোগদানে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না। কারণ, আমি একজন সৈনিক। কিন্তু জুলফিকার আলী ভুট্টো আমার বিরুদ্ধে এমনভাবে বিষোদগার ও মিথ্যা প্রচারণা চালাতে থাকেন যে, আমি আমার সম্মান বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই।
জুলফিকার আলী ভুট্টোর মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাজনৈতিক প্লাটফর্ম একটি সর্বোত্তম জায়গা হওয়ায় আমি রাজনীতিতে যোগদান করি। লাহোরের দিল্লি গেইটে আমি প্রথম ভাষণ দিই। জনগণ আমার ভাষণকে অভিনন্দন জানায়।
পরদিন মাওলানা নুরানী ও মাওলানা আবদুল সাত্তার খান নিয়াজি আমার বাসভবনে আসেন এবং আমাকে জমিয়ত উলেমা-ই-পাকিস্তানে (জেইউপি) যোগাদানের আমন্ত্রণ জানান। আমি এ দুই জন খ্যাতিমান আলেমের সান্নিধ্যে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি ।
আমি মাওলানা আব্দুল সাত্তার খান > নিয়াজিকে আগে থেকেই চিনতাম এবং একজন সৎ ব্যক্তি হিসেবে তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতাম। আমি বিশ্বাস করতাম যে, তিনি আমাকে সঠিক পথে পরিচালনা করবেন। মাওলানা নুরানীও ছিলেন অত্যন্ত উঁচু মানের মানুষ এবং ইস্লাম সম্পর্কে ছিল তার।

করাচি থেকে আমি হায়দারাবাদে যাই। সমাবেশের আগে একটি মিছিল বের হয়। আমি তাতে নেতৃত্ব দিই। শহর ও আশপাশের লোকজন সমাবেশে হাজির হয়। সকল রাস্তা-ঘাট ও বাড়ির ছাদ লোকে লোকারণ্য। হায়দরাবাদ ছিল সেদিন জনসমুদ্র।
জুলফিকার আলী ভুট্টোর টনক নড়ে। সেদিন রাতেই লতিফাবাদে মেজর সাকিবের বাসভবন থেকে আমাকে গ্রেফতার করা হয় এবং মেজর সাকিবসহ আমাকে শুরুর কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। মেহমুদ আজম ফারুকী ও অধ্যাপক গফুর আহমেদ করাচিতে আমাকে সহায়তা করেন।
অধ্যাপক গফুর আমার কাছে অনুপ্রেরণার এক উৎস হিসেবে প্রমাণিত হন। করাচিতে তিনি সারাক্ষণ আমার সাথে থাকতেন এবং আমাদের মাঝে বন্ধুত্ব হয়। জনাব ফারুকী ও অধ্যাপক গফুর উভয়ে আমাকে এতো ভালোবেসে ফেলেন যে, লাহোরে এলে তারা আমার সাথে দেখা না করে যেতেন না। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবার পরও তারা তা করেছেন।
গ্রেফতার হবার আগে আমি করাচি কারাগারে আটক পিএনএ নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে পূর্ণ সম্মান প্রদান করে। আমার জন্য ফটক খুলে দেওয়া হয়। একমাত্র ডিপিআইপি ‘রাই এ সুযোগ পেয়েছে থাকে।একইভাবে শুরুর কারাগারে পৌঁছলেও আমাকে জেলার ও ডেপুটি জেলার অভ্যর্থনা জানান এবং আমার সম্মানে গেইট খুলে দেওয়া হয়।
জুলফিকার আলী ভুট্টোর আমলে কারা কর্তৃপক্ষের জন্য আমাকে সম্মান দেখানো ছিল সত্যিই বিপজ্জনক। জেলার ও ডেপুটি জেলার অফিসে আমাকে চা পান করান এবং আমাকে যেখানে থাকতে হবে সেখানে তারা উভয়ে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে নিয়ে যান।
আরও দেখুন: