আমাদের আজকের আলোচনা বিষয় –নূতন গণপরিষদ গঠণ। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও নির্বাচিত দলিল এর একটি অংশ।
নূতন গণপরিষদ গঠণ
বন্ধুগণ! নূতন গণপরিষদ গঠণের ও উহার নির্বাচনের তারিখ ধার্য্য করে তদানীন্তন গভর্ণর জেনারেল যখন চিকিৎসার জন্য জুরিখ চলে গেলেন সেই অবকাশে সুযোগ বুঝে মিঃ মোহাম্মদ আলী ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হবার পথ সুগম করবার জন্য নূতন গণপরিষদে তাহার সমর্থক সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জনাব হকের মনোণীত মিঃ আবু হোসেন সরকারকে রাতারাতি পূর্ববাংলার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে পূর্ববঙ্গ থেকে ৯২-ক ধারার অবসান করেন, এবং করাচী যেয়ে আস্ফালন করে বলেন যে এবার আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম লীগের সভাপতি, সামন্তবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের ধারক ও বাহক মিঃ মোহাম্মদ আলী একথা ভাবতেও পারেন নি যে পূর্ব পাক আওয়ামী লীগ একটি সুসংহত দল এবং উহা মন্ত্রীত্ব শিকারী বা ক্ষমতালোভীদের আড্ডা নয়। কাজেই তার আস্ফালন ও গর্ব ধূলিসাৎ করে দিয়ে আপনাদের আওয়ামী লীগের ৯৫ জন পরিষদ সদস্য একথা গণ পরিষদ নির্বাচনে ও পূর্ববঙ্গ পরিষদের স্পিকার নির্বাচনে প্রমাণ করে দিয়েছে যে আওয়ামী লীগ একটি জনগণের প্রতিষ্ঠান এবং ইহা গণদাবীর প্রতিভূ হিসেবে সমস্ত লোভ মোহ জয় করে যে-কোণ গণবিরোধী শক্তির মোকাবিলা করতে সাহস ও শক্তি রাখে।

যাহা হউক অগণতান্ত্রিক পন্থায় আবু হোসেন সরকারের মন্ত্রীসভাকে প্রতিষ্ঠিত করলেও ৯২-ক ধারার অবসানকে আমর মোবারকবাদ জানিয়েছিলাম এবং আমাদের শ্রদ্ধেয় সভাপতি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে পল্টন ময়দানের জনসভায় পূর্ববঙ্গের সরকার মন্ত্রীসভা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের স্পষ্ট নীতি ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি হ্যার্থহীণ ভাষায় ঘোষণা করেছিলেন যে, জাতীয় প্রগতি ও বিকাশের স্বার্থে জাতির মুক্তি সনদ একুশ দফার বাস্তব রূপায়ণ অপরিহার্য্য। সরকার- মন্ত্রিসভা যতক্ষণ একুশ দফার এক দফাও কার্য্যকরী করতে চান ততক্ষণ আওয়ামী লীগ তার পক্ষে আছে। কিন্তু বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ একুশ দফার প্রতিটি দফার বাস্তব রূপায়ণের দাবীতে জনসাধারণকে সংগঠিত করবার কাজে আত্মনিয়োগ করবে।
আরও দেখুনঃ