[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

যুক্তফ্রন্টের নিৰ্ব্বাচন পৰ্ব্ব

আমাদের আজকের আলোচনা বিষয় –নিৰ্ব্বাচন পৰ্ব্ব। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও নির্বাচিত দলিল এর একটি অংশ।

নিৰ্ব্বাচন পৰ্ব্ব

 

নিৰ্ব্বাচন পৰ্ব্ব

 

বন্ধুগণ! যুক্তফ্রন্ট গঠনের পরই এল নির্বাচন পর্ব। নির্বাচনে দু’শ সাইত্রিশটি মুসলিম আসনে প্রার্থী মনোনয়ণের জন্য গঠিত হল এক ষ্টিয়ারিং কমিটি। উক্ত কমিটিতে আওয়ামী লীগের, কৃষক শ্রমিক পার্টির, ও নিজামে ইসলামের সমসংখ্যক সদস্য ছিল। এটা স্থির হয়েছিল যে, প্রত্যেকটি মনোণয়ণ ত্যাগ ও উপযুক্ততার ভিত্তিতে সর্ববাদী সম্মত হতে হবে।

কিন্তু বড়ই দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, কৃষক শ্রমিক পার্টি ও নিজামে ইসলাম তাদের নিজেদের দলীয় লোকদেরকে বেশীরভাগ মনোণয়ণ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।যেখানেই আওয়ামী লীগ সদস্যরা ত্যাগ ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে প্রার্থী মণোণীত করার কাজে এগিয়ে এসেছে সেখানেই উপরোক্ত দল দুটি তাদের দলীয় প্রার্থী মনোণয়ণ না পেলে যুক্তফ্রন্ট ত্যাগের হুমকী দিয়েছে।

জনতার দাবী যুক্তফ্রন্টের ঐক্য বজায় রাখবার জন্যও শুধু ২১-দফার দাবীকে ভবিষ্যতে রূপায়িত করবার আশা নিয়ে আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব বহু ত্যাগী, যোগ্য ও নিঃস্বার্থ কর্মীকে বলিদান করে হক সাহেবের দলীয় লোকদেরকে মনোণয়ণ দিতে বাধ্য হয়েছিল। এমনকি, ২৩৭টি মনোণয়ণের মধ্যে আমাদের শ্রদ্ধেয় সভাপতি জনাব ভাসানী সাহেব চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জন্মদাতা ও প্রাণ জনাব আবদুল আজিজকে মনোণয়ণ দেওয়ার জন্য একটিমাত্র অনুরোধ করা সত্ত্বেও জনাব হকের দলীয় লোকদের অন্যায় চাপে সেটাও দেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

নির্বাচনে মনোণয়ণ দেয়ার ব্যাপারে যে কিভাবে টাকার ছড়াছড়ি হয়েছিল সে ঘৃণ্য ও কুৎসিত ইতিহাস আমি আলোচনা করতে লজ্জাবোধ করছি। এরপর এলো নির্বাচনী প্রচারণার কাজ। জনাব হক তার দলীয় লোকদের এলাকা ভিন্ন আওয়ামী লীগের দলভুক্ত মণোণীত সদস্যদের দুই একটি এলাকা বাদে আর কোন এলাকাতেই সফর করেন নি।

কিন্তু আমাদের শ্রদ্ধেয় সভাপতি জনাব ভাসানী ও আমাদের অন্যতম নেতা জনাব হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদ্দী দলমত নির্বিশেষে যুক্তফ্রন্টের মণোণীত প্রার্থীদের এলাকায় নিঃস্বার্থভাবে অক্লান্ত প্রচারণা চালিয়েছেন।জনাব হক যখন বরিশাল জেলায় নির্বাচণী প্রচার উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় সফর করছিলেন তখন তদানীন্তন পাকিস্তান মুসলিম লীগ সভাপতি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ মোহাম্মদ আলীর গোপণ আমন্ত্রণ পেয়ে বরিশাল জেলার নির্বাচণী সফর সূচী বাতিল করে।

তিনি রাজধানী ঢাকার বুকে ফিরে এলেন এবং মিঃ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে এক গোপণ চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন যে, জনাব হক উত্তর বঙ্গে কোন নির্বাচণী প্রচার চালাবেন না এবং হক সাহেবের দলের যে কয়জন লোক নির্বাচনে জয়ী হবে তাদেরকে নিয়ে জনাব হক মুসলিম লীগের বিজয়ী প্রার্থীদের সাথে মিলিত ভাবে পূর্ববাংলায় কোয়ালিশন সরকার কায়েম করবেন।

 

নিৰ্ব্বাচন পৰ্ব্ব

 

জনাব হকের এই ঘৃণ্য গোপণ চুক্তির কথা প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম লীগের মুখপাত্র দৈনিক ‘ডন’ কাগজের মারফতে আপনারা অনেকেই হয়ত জানতে পেরেছেন।কিন্তু নির্বাচনের পরে দেখা গেল যে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২২টি আসনই যুক্তফ্রন্ট পার্টি দখল করেছে। জনাব হক এগার বছর পর্য্যন্ত জনগণের সঙ্গ থেকে দূরে থাকার ফলে একথা ভাবতে পারেন নি যে যুক্তফ্রন্ট পার্টি এইরুপ ঐতিহাসিক বিজয়ের অধিকারী হবে, এবং তিনি তা ভাবতে পারেন নি বলেই মিঃ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে এরূপ এক গোপণ আঁতাত করতে পেরেছিলেন।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment