[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ। যা ” দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান- এ এ কে নিয়াজি” বইয়ের অংশ।

ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ

 

ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ

 

ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ

প্রায় দুই সপ্তাহ বিশ্রামের পর আমাদেরকে ভাতা দেওয়া হয়। ১৬১ ব্রিগেডকে নির্দেশ দেওয়া হয় জাপানি সৈন্য প্রত্যাহারে বাধা, তাদের হয়রানি এবং তাদের দল ও যানবাহন ধ্বংস করতে। ব্রিগেডের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪/৭ রাজপুতকে নির্দেশ দেওয়া হয় রাস্তা অবরোধ, শত্রুদের ওপর হামলা ও তাদের হয়রানি।

করার জন্য। একজন লেফটেন্যান্ট হিসেবে ব্রাভো ও চার্লি কোম্পানির সার্বিক। দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। আমি ছিলাম লেফটেন্যান্ট রিচার্ডসনের সিনিয়র। তিনি চার্লি কোম্পানিকে নেতৃত্ব দিতেন। নিয়ম অনুযায়ী দুটি সম্মিলিত কোম্পানির অপারেশনে নেতৃত্ব দিতে হয় ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড (২১/সি)-কে। কিন্তু এই কঠিন মিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমাকে। আমি এমন উঁচু জায়গায় সৈন্য মোতায়েন করি, যেখান থেকে গুলি করা বেশ সহজ হয়। টেঞ্চগুলো ছিল শত্রুদের ধোঁকা দেবার জন্য সঠিক।

ফাঁদে ফেলতে আমরা জাপানিদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। পরদিন একদল সৈন্য রাস্তা ধরে এগিয়ে আসতে লাগলো। আমি সুবেদার ভরত সিং-এর অধীনে একটি প্লাটুন পাঠাই আগে থেকে প্রস্তুত পেছনের একটি অবস্থানে, মূল বাহিনী থেকে অগ্রসরমান জাপানি সৈন্যদের বিচ্ছিন্ন করার জন্য।

অগ্রসরমান জাপানি সেনাদল ভরত সিং-এর সেনাদলকে অতিক্রম করা মাত্র তাদের ওপর প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ শুরু হয় এবং তাদেরকে মূল বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তখন আমরা গুলি করা থেকে বিরত থাকি।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আমাদের অবস্থান অদখলকৃত ভেবে জাপানি সেনা কমান্ডার পাহাড়ের চূড়ার দিকে ছুটে যান, কিন্তু তার সৈন্যরা আমাদের গোলাবর্ষণে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। জাপানি কমান্ডার এক অংশ সৈন্য উদ্ধার করেন এবং আত্মরক্ষামূলক অবস্থান গ্রহণ করেন।

জাপানি অফিসাররা তলোয়ার বহন করায় তাদেরকে শনাক্ত করা সহজ হয়। লেফটেন্যান্ট রিচার্ডসনকে সৈন্যদের দায়িত্বে রেখে আমি এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে শত্রু অধিকৃত একটি এলাকা ঘেরাও করি। ক্রলিং করে ও নিজেদেরকে আড়াল করে আমরা তাদের কাছে এসে পড়ি।

১ ঘণ্টার মধ্যে বেশির ভাগ জাপানি সৈন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তারা হয় তাদের নিজেদের গুলিতে আত্মহত্যা করে অথবা আমাদের গুলিতে মারা যায়। তারা কখনো আত্মসমর্পণ করে নি। দলের কমান্ডার তখনো জীবিত ছিলেন। তিনি ছিলেন গর্বিত ও দুঃসাহসী।

তিনি অবজ্ঞার সাথে তার তলোয়ার উঁচু করে ধরলেন এবং আমাকে আহ্বান করলেন তার সাথে যুদ্ধ করতে। আমি আমার লোকদের বললাম তাকে যেন গুলি না করে। দুজন জওয়ানকে পাঠালাম আশেপাশে কোনো জাপানি সৈন্য আছে কিনা তা দেখতে।

আমি আমার অবস্থান থেকে উঠে এলাম, জাপানি অফিসার যুদ্ধ করার ভঙ্গিতে দাঁড়ালেন। তিনি ছিলেন আমার চেয়ে বয়স্ক। ক্রুদ্ধ ষাড়ের মতো তিনি আমাকে আক্রমণ করলেন। আমি প্রতিহত করলাম তার আক্রমণ। তার দ্বিতীয় আক্রমণের সময় আমি তার গলায় বর্শা নিক্ষেপ করলাম। এটা আমি কিনেছিলাম কোহিমায় এক নাগার কাছ থেকে।

 

ঢালু পাহাড়ে ফাঁদ

 

আমার সৈন্যরা শৃঙ্খলা ও সাহস প্রদর্শন করে। প্রশংসা করা হয় এ কর্মকাণ্ডের এবং আমাকে দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া হয়। ব্রিগেডিয়ার ওয়ারেন তখন আমাকে ‘টাইগার’ নাম দেন। এরপর থেকে আমি এ নামে পরিচিত হয়ে উঠি সবখানে।

আরও দেখুন:

Leave a Comment