[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

গোপনীয় দরখাস্ত ১

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ  গোপনীয় দরখাস্ত ১। যা ” দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান- এ এ কে নিয়াজি” বইয়ের অংশ।

গোপনীয় দরখাস্ত ১

 

গোপনীয় দরখাস্ত ১

 

অবিলম্বে

সদর দপ্তর ইস্টার্ন কমান্ড ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট

ফোন : ২৫১

৭২১/আর/এআই

১৫ই এপ্রিল ১৯৭১

কমান্ডার, ১৪ ডিভিশন, এসিসি পিএএফ

কমান্ডার, ৯ ডিভিশন, কমান্ডার সিএএফ

কমান্ডার, ১৬ ডিভিশন, ওসি সিডো, বিএন

ডিজি, ইফকাফ, এসি ৬০৪ এফআইইউ

কমান্ড ইপি লগ এরিয়া, ওসি, ৭৩৪ এফআইসি

কনসেপ ২৭ জিএল সেকশন

ইনফোঃ

সদর দপ্তর, এমএলএ জোন ‘বি’, ডেট আইএসআই

অভ্যন্তরীণঃ

জিএস ব্রাঞ্চ, এ্যাস্টাবলিশমেন্ট ব্রাঞ্চ

ডিস্ট্রিক্টঃ

সদর দপ্তর, ডেফ কয়

বিষয় : শৃখলা-সৈন্য

১. আমি এসে পৌঁছানোর পর থেকে সৈন্যদের লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ভুরি ভুরি খবর পাচ্ছি। সম্প্রতি ধর্ষণের খবরও পাওয়া যাচ্ছে, এমনকি পশ্চিম পাকিস্তানিরাও রেহাই পাচ্ছে না। ১২ই এপ্রিল দুই জন পশ্চিম পাকিস্তানি মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় এবং আরো দুই জনকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়। শোনা যাচ্ছে যে, প্রত্যাবর্তনকারী পরিবারের মাধ্যমে লুণ্ঠিত মালামাল পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে।

২. আমি আরো খবর পাচ্ছি যে, এসব জঘন্য কর্মকাণ্ডের সাথে অফিসাররাও জড়িত রয়েছেন। উপর্যুপরি নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কমান্ডারগণ এ চরম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছেন। আমার ধারণা, ইউনিট ও সাব-ইউনিটের ওসি এবং ওএসসি গণ এসব অপরাধ গোপন করেছেন ও প্রশ্রয় দিচ্ছেন।

৩. আমি সকল কমান্ডারকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি যে, অবিলম্বে এসব জঘন্য তৎপরতা বন্ধ এবং নির্মূল করা না হলে লড়াইয়ের সামর্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। এটা একটা সংক্রামক ব্যাধি এবং আপনাদেরকে এ সমস্যার বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও সূদুরপ্রসারী পরিণাম সম্পর্কে পুরোপুর সচেতন হতে হবে।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

নয়তো একদিন তা আমাদের মা-বোন এবং আমাদের নিজস্ব লোকজনের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা যাবে। ইতিহাসে এমন বহু নজির রয়েছে যে, লুটতরাজ ও ধর্ষণের লিপ্ত হওয়ায় যুদ্ধে সৈন্যদের পরাজিত হতে হয়েছে।

৪. অতএব, আমি সৈন্যদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি যে, প্রত্যেককে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নয়তো শাস্তি পেতে হবে তাদেরকে। বিশৃঙ্খলা, অসদাচার ও অর্থনৈতিকতাকে কঠোরহস্তে নির্মূল করা হবে। এ ধরনের হীন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে দোষী প্রমাণিত হলে অফিসারসহ সকলকে কঠোর দণ্ড ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। আমি আমার সৈন্যদেরকে ভবঘুরে এ সদস্যতে পরিণত হতে দেব না। এ ধরনের লোকের প্রতি কোনো সহানুভূতি ও করুণা প্রদর্শন করা হবে না ।

৫. আমি কমান্ডারদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের একটি মহান মিশন রয়েছে এবং আমরা আমাদের লক্ষ্য থেকে কখনো অনেক দূরে। কোনো বাধাই আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আমাদেরকে বিরত রাখতে পারবে না। তবে বিশৃঙ্খলাই কেবল আমাদের ক্ষতি করবে।

৬. আমি রণাঙ্গনের প্রতিটি সৈনিককে শৃঙ্খলার একটি মূর্ত প্রতীক ও উদাহরণ হিসেবে দেখতে চাই। আমি অফিসারদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, তাদের সম্মান ও আচরণের একটি বিধি রয়েছে এবং ভদ্রলোক ও অফিসার। হিসেবে তারা এ আচরণ বিধি মেনে চলবেন। এ প্রদেশের জনগণের মন জয় এবং আমাদের লক্ষ্য অর্জনে এ আচরণ বিধি মেনে চলা খুবই জরুরি।

৭. এ নির্দেশ পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োজিত সব গোয়েন্দা সংস্থা, এমপি ও এসএসজিদের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োজন।

 

গোপনীয় দরখাস্ত ১

 

স্বাক্ষর-

লেফটেন্যান্ট জেনারেল

কমান্ডার, ইস্টার্ন কমান্ডন

(আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি)

আরও দেখুন:

Leave a Comment